Monday, November 28, 2011

সূর্যোদয়ের পর

নিজেকে অচেনা মনে হতে শুরু করেছে সূর্যোদয়ের পর থেকে। অনেকটা যেন সরীসৃপ- কিনবা অন্য কোন প্রাণীর মত জিহবাএ ভেতর থেকে বেড়িয়ে আস্তে চাইছে ঠান্ডা রক্তের ঘ্রাণ-অজগর কিনবা অন্য কোন প্রাণীর মত।আহ হয়ত মরেই যাব।মরে যদি যেতেই হয়- মানুষ হয়েই মরি- কেন তবে সরীসৃপ আমি

কে জানে -হটাত কেন যেন আমি আবিষ্কার করি ভাস্কোডাগামার মত- কিনবা পাব্লো আমেরিগোর মত- আমি মানুষ নেই- জেব্রার ডোরার মত কিনবা অজগরের চামড়া বদলের মত চামড়া কেটে বের হতে চাইছে গাঢ় লালচে রক্ত-হলদে লালার মাঝে হারাতে শুরু করেছে আমার রক্তাভ লেজ।আমি যেন গিলতে শুরু করেছি নিজেকে। সাপ লুডূর সাপের মত আমি মই না পেয়ে নিজেকেই খেতে শুরু করেছি। কামড়ে কামড়ে ছিড়তে শুরু করেছি নিজের কান্না- নিজের সুপ্ত বাসনা- হত্যা করতে শুরু করেছি আমাকেই।আহা সূর্য ডুবে এখন রাত। আগামী সূর্য আর আসবেনা। তাই এখনি সময় নিজেকে শেষ করে দেবার।

এখন আমি কামড়ে আছি আমার লেজ- যেখানে একসময় ছিল আমার এক জোড়া পুরুষ্ট পা- যার একটু উপরেই ছিল আমার নিতিম্ব- খানিকটা উপরে আমার শিশ্ন। এখন সেখানে নেই কিছুই- শুধু লকলকে লেজ। সপ্ত ছিদ্রের একটা মাত্র ছিদ্র অবশিষ্ট থাকে সেখানে। ব্যাঙ্গাচির কোন জীবন ছিল কিনা জানিনা-মাতৃজঠরে আমি তো ব্যাঙ্গাচির চাইতে ও অধ্ম ছিলাম। এখন তার ও অধ্ম। বাইরে পেট মোটা নির্জীব লেজ- ভেতরে বিষাক্ত কানকো। কামড়ে ধরেই বুঝতে পারি মানুষ আমি ছিলাম না কোন কালেই। মানুষের মত মুখোশ পড়ে ছিলাম একদল পশুর মাঝে। মানুষের মত কিনবা পশুর মত আমি হেটেছি- ফিরেছি- স্বপ্ন দেখেছি। তাই আমি মানুষ হতে পারিনি। মানবতা নামের কোন বস্তুও ছিলনা কোন কালেই।যে রক্তের ধারা আমার মনে হয়েছিল গরম- টগবগে সেটা ছিল বস্তুত ঠান্ডা- সরিসৃপের মত।অবশেষে তাই আমি গিলতে শুরু করেছি পূর্বপুরুষের লাভা- উত্তর পুরুষের রক্ত- অনেকটা শুয়োপোকার মত। অনেকটা মানুষ নামের রক্ত চোষা প্রাণীর মত।

আবার চারদিকে লালচে হতে শুরু করেছে। খানিক আগে থেকে মনে হতে শুরু করেছে আমি নিজেকে মানুষ ভেবেই ভাল আছি। পশু আমার ভেতরে আছে বলেই আমি নিজেকে পশু ভেবেছিলাম।।

No comments:

Post a Comment