Friday, April 1, 2011

মহানায়কের মশাল

অবশেষে মশালটা হাতে পেলাম
ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা মশাল
বুকে যার অদম্য জ্বালা
হাতে নিয়ে আমি হয়ে গেলাম ইতিহাসের মহানায়ক
ভুমিকায় আমার অনেক বাঁধা ছিলো
অনেক কষ্ট ছিলো
ছিলো না খেয়ে রাতের পর রাত কাটানোর যন্ত্রণা
মশালটা পাবার পর বেড়ে গেল সব-
বাতাসে তার শিখা কেঁপে কেঁপে জ্বলে
ঝড়ের টানে নিভে যেতে চায়
আমার কাজ শুধু আগলে রাখা
নশ্বর পিতা আমাকে দিয়ে গিয়েছিলেন
আর বলে গিয়েছিলেন
'বিশ্বচক্রের মশাল এখন তোমার আগলানোর পালা
বয়ে নিয়ে যেতে হবে অগ্নিকোণে
চারপাশে হুমকার আর নিনাদ ভেদ করে
এগিয়ে যেতে হবে নির্ভার হয়ে'

তারপর কত প্রজন্ম
কাঁটা বিছানো পথে হেটে-
আমি ভয় পাইনি
আমি মশালটা হাতে নিয়ে শিহরিত হয়েছিলাম
নগ্ন আগুন আমাকে টেনেছিলো
কঠিন শিলা আমার পায়ে এনে দিয়েছিলো ক্রান্ত ব্যাথা
হাটুতে শক্তি এত কমে গিয়েছিলো যে আমি দৌড়াতে গিয়ে
হোচট খেয়েছিলাম
কিন্তু আমি দমে যাইনি
হাত বদল করেছি
পায়ের ব্যাথায় বদল করেছি শরীরের চাপ এক পা থেকে আরেক পায়ে
মেরুদন্ডের কশেরুকায় বেঁধেছি লাল চাদর
মাথার উপর কঠিন তেজে আগুনের তাপে
আমি দগ্ধ হয়েছি শতবার
তবু আমি মহানায়কের মত আমি কপালাক্ষি শক্যের মত
কিনবা দিগ্বিজয়ী বীর আলেকজান্ডারের মত
হেটে চলেছি সেই মশাল নিয়ে
হয়ত অগ্নি কোণে যাওয়ার আগেই আমি মিশে যাব
আমি মিশে যাব সময়ের অতলে
তখন মশালের নায়ক হবে আমার সন্তান
কিন্তু ততদিন আমাকেই বয়ে নিয়ে যেতে হবে
যেমন বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আমার পূর্বপুরুষেরা...

No comments:

Post a Comment